বিশ্বাসের সীমা, সময়ের শিক্ষা

যেদিন ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো, সেদিন তার নিথর দেহে সবচেয়ে বেশি থুতু ফেলেছিল তারই প্রজারা—যাদের জন্য তিনি আজীবন বিশ্বাসের বীজ বপন করেছিলেন। আর ইন্দিরা গান্ধী, যিনি নিজের দেহরক্ষীর প্রতি অগাধ আস্থা রেখেছিলেন, সেই দেহরক্ষীর গুলিতেই হারালেন জীবন।

পৃথিবীর এই অমোঘ নিয়ম—মানুষ যাকে সবচেয়ে বেশি ভরসা করে, শেষমেশ সেই মানুষটিই হয়ে ওঠে তার পতনের কারণ। জানেন কি, আপনাকে সবচেয়ে গভীর আঘাত কে দিতে পারে? যে মানুষটির ওপর আপনি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস রাখেন, তিনিই একদিন আপনার হৃদয়ে সবচেয়ে বড় ক্ষত তৈরি করতে পারে।

এই পৃথিবীতে কারো সঙ্গ চিরস্থায়ী নয়। আল্লাহ ছাড়া এখানে কেউ কারো নয়। মানুষ পাশে থাকে যতদিন সুখ থাকে; দুঃখের সময় তারা শুধু দর্শক হয়ে যায়। এমনকি যদি আপনি নিজের দুঃখ বিক্রিও করতে চান, তবুও কেউ তা গ্রহণ করবে না বিনিময় ছাড়া। তাই বিশ্বাসের হাতটি সহজে কাউকে বাড়াবেন না।

জীবনের পথে অসংখ্য মানুষ আপনার সঙ্গে চলবে—হাসবে, গল্প করবে, পাশে থাকবে; কিন্তু যখন তাদের স্বার্থের শেষ সীমানা ছুঁয়ে যাবে, তখন তারা নীরবে সরে যাবে অন্য কোনো পথে। শেষমেশ আপনি একাই দাঁড়িয়ে থাকবেন সময়ের প্রান্তে।

জীবন সত্যিই সুন্দর, যদি আপনি নিজেকে ভালোবাসতে পারেন। কারণ, কেউই আপনার আপন নয়—সময় ছাড়া। সময়ই একমাত্র নীরব শিক্ষক, যে একদিন আপনাকে নিখুঁতভাবে শেখাবে—বিশ্বাসেরও মূল্য আছে, ভালোবাসারও সীমা আছে, আর ভরসারও পরিণতি আছে।

Previous articleযেখানে মানুষ থেমে যায়, আল্লাহ শুরু করেন
Next articleসম্পর্কের ভেতরের অদৃশ্য ভার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here