ছাত্রজীবন হলো মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সময়টাতেই একজন মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু একটি বিষয় প্রায়ই আমরা ভুলে যাই—সময়। সময়কে অবহেলা করলে সেটি আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয়, আর সময়কে মূল্য দিলে সেটিই হয়ে ওঠে আমাদের সফলতার সবচেয়ে বড় বন্ধু।
অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভাবে, সামনে তো অনেক সময় আছে—পরে পড়ব, পরে কাজ করব। কিন্তু সত্য হলো, সময় কখনও কারও জন্য অপেক্ষা করে না। পরীক্ষার আগে যারা প্রস্তুতি নেয়নি, শেষ মুহূর্তে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আবার যারা প্রতিদিন অল্প হলেও নিয়মিত পড়াশোনা করেছে, তারা সহজেই সফল হয়। এখানে বোঝা যায়—সময় কারও শত্রু নয়, আমরা নিজেরাই সেটিকে শত্রু বানাই।
সময়কে বন্ধু বানানোর জন্য সবচেয়ে প্রয়োজন শৃঙ্খলা ও পরিকল্পনা। প্রতিদিন একটি লক্ষ্য ঠিক করুন—আজ কী শিখব, কোন কাজ শেষ করব। লক্ষ্য ছোট হলেও নিয়মিত হলে তা আপনাকে বড় সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে। যেমন নদীর ফোঁটা ফোঁটা পানি একত্র হয়ে সাগর তৈরি করে, তেমনি ছোট ছোট সময়ের সঠিক ব্যবহার বড় অর্জনের পথ খুলে দেয়।
ছাত্রজীবনের সাফল্য নির্ভর করে আপনি কেমন অভ্যাস গড়ে তুলছেন তার উপর। সকালে ঘুম থেকে ওঠা, ক্লাসে মনোযোগ দেওয়া, নিয়মিত পড়াশোনা, ভালো বই পড়া, শিক্ষকদের পরামর্শ শোনা—এসবই হলো সময়কে বন্ধু বানানোর কৌশল। এই অভ্যাসগুলো শুধু পড়াশোনায় নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্বগুণ তৈরি করবে। যে ছাত্র নিজের সময়কে সম্মান করতে শেখে, সে ভবিষ্যতে অন্যদের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠে।
মনে রাখবেন, সময় একবার চলে গেলে আর ফেরে না। হারানো অর্থ, হারানো সুযোগ অনেক সময় ফিরে আসে, কিন্তু হারানো সময় আর কখনও ফিরে আসে না। তাই আজকেই ঠিক করুন—সময়কে অবহেলা করবেন না। প্রতিদিনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগান, তাহলে সময়ই আপনাকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।
শেষকথা হলো—সময়কে শত্রু নয়, বন্ধু বানান। যে ছাত্র সময়কে নিজের বন্ধু করতে পারে, সে পড়াশোনায় যেমন এগিয়ে যায়, তেমনি জীবনে বড় নেতা হওয়ার যোগ্যতাও অর্জন করে। আজকের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আগামীকাল আপনিই হবেন অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা।