মানুষ মানুষকে নয়, বরং মানুষের অবস্থানকে ভালোবাসে।

মানুষের অন্তর্সত্তা, তার নিভৃত গুণ—এসবের প্রতি মুগ্ধতা আজ বড়ই বিরল। আপনার অবস্থান ভালো হলে, আপনার সামর্থ্য, ক্ষমতা, শক্তি, পরিচিতি—যাই থাকুক না কেন, দেখবেন মানুষের ভিড় আপনাকে ঘিরে রাখতে একটুও দেরি করে না। মানুষের ভেতরের সত্যিকারের সৌন্দর্য, তার মন, তার অনুভূতি—এসব যেন আজ আর তেমন মূল্য পায় না। মূল্য পায় ক্ষমতা, পরিচিতি, প্রভাব, অর্থ, খ্যাতি—অর্থাৎ যেসব জিনিস মানুষকে সাময়িক উজ্জ্বল করে তোলে। আপনার জীবন যত উঁচুতে উঠবে, আপনার চারপাশে মানুষের ভিড় তত বাড়বে। মনে হবে সবাই আপনাকে ভালোবাসে, আপনাকে সম্মান করে, আপনাকে চায়।

কিন্তু সত্য হলো—
আপনার শক্তি, আপনার সামর্থ্য, আপনার সাফল্য—এসবই মানুষকে আপনার দিকে টেনে আনে। আপনি যত আলো ছড়াবেন, মানুষের উপস্থিতি তত ঘন হবে। তারা আপনার সান্নিধ্যে থাকতে চায়, কারণ আপনার অবস্থান তাদের চোখে আপনাকে মূল্যবান করে তোলে।

কিন্তু অবস্থান বদলাতে বেশি সময় লাগে না। যেই মুহূর্তে আপনার আলো কিছুটা ম্লান হবে, যেইদিন ভাগ্য একটু অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেবে—দেখবেন সেই ভিড় হঠাৎ হারিয়ে গেছে। তখন বুঝবেন—যাদের আপনি নিজের মনে করতেন, তারা আসলে ছিল আপনার অবস্থানের যাত্রী; আপনার অন্তরের মানুষ ছিল না কেউই। মানুষের প্রকৃত স্বরূপ বোঝা যায় তখনই, যখন আপনার কিছুই থাকে না।

তখনই পরিষ্কার হয়—
কে আপনাকে মানুষ হিসেবে ভালোবাসে, আর কে শুধু আপনার অবস্থানকে ভালোবাসত। সুতরাং অবস্থান নয়, মানুষকে চিনুন। কারণ অবস্থান তৈরি করা যায়, হারিয়েও যায়—কিন্তু সত্যিকারের মানুষ চেনা যায় শুধু পতনের সময়েই।

Previous articleসম্মানের কাছে আমি আপোষহীন
Next articleThe Strategic Rise of Modern HR: Why People Management Now Determines Business Success

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here