শেরেবাংলা নগরের ফুটপাতেই জমত তাঁদের প্রাণের আড্ডা।
পড়াশোনার ফাঁকে টং দোকানের সামনে বসে চায়ের কাপ হাতে প্রতিদিন চলত তুমুল আড্ডা—কেউ কেউ বলতেন, চায়ের কাপেই ঝড় উঠত! চার বন্ধুর বন্ধুত্বটা ছিল ঠিক এমনই। সেদিনও ঠিক তেমন এক বিকেলে, এক বন্ধুর আত্মীয় হুট করে একটা প্রস্তাব নিয়ে এলেন—ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য খালাসের একটি কাজ।
সালটা ১৯৭৮। বয়স কম, তারুণ্যের সাহস অনেক। বেশি ভেবে না দেখেই রাজি হয়ে গেলেন চার বন্ধু।
কিন্তু বড় সমস্যা দেখা দিল মূলধন জোগাড়ে। কারও হাতেই তখন পয়সা নেই।
তবু দমে না গিয়ে চারজনে ছুটে বেড়ালেন চেনা-অচেনা সব জায়গায়, কেবল কিছু টাকার জন্য।
কোনো জমানো পুঁজি ছিল না, ছিল শুধু পরস্পরের ওপর অগাধ বিশ্বাস আর অক্লান্ত পরিশ্রম করার মানসিকতা।
সেই ছোট্ট শুরু থেকেই যাত্রা করল একটি প্রতিষ্ঠান, যা আজ দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য।
নামটি এখন সবাই চেনে—ইউনাইটেড গ্রুপ।
এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ইউনাইটেড হসপিটাল, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিমার্ট সুপারশপের মতো পরিচিত নামগুলো। আরও আছে বিদ্যুৎকেন্দ্র, আবাসন প্রকল্প, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বেসরকারি বন্দর, লজিস্টিকসহ নানা ধরনের ব্যবসা।
এই পথচলার রূপকার চার বন্ধু—হাসান মাহমুদ রাজা, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, আকতার মাহমুদ রানা ও খোন্দকার মইনুল আহসান শামীম।
দশ বছর পর তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
আজকের ইউনাইটেড গ্রুপ সেই ছয় বন্ধুর বন্ধুত্ব, সাহস, এবং স্বপ্ন দেখার অদম্য ইচ্ছার ফল।