নিজের প্যাশন খুঁজে বের করা

নিজের প্যাশন খুঁজে বের করা মানে নিজের ভেতরের আগুনকে চিনে ফেলা। অনেকেই শুধু বেঁচে থাকার জন্য কাজ করে, প্রতিদিনের রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে যায়, কিন্তু ভিতরে ভিতরে অপূর্ণ থেকে যায়। কারণ, তার কাজের সঙ্গে তার মনের যোগ থাকে না। প্যাশন হলো সেই শক্তি, যা মানুষকে শুধু সাফল্যের দিকে ঠেলে দেয় না, বরং তাকে আনন্দও দেয়। যখন কেউ নিজের ভালোবাসার কাজ খুঁজে পায়, তখন তার ক্লান্তি কমে যায়, উৎসাহ বেড়ে যায়, আর প্রতিদিনের জীবন হয় অর্থবহ।

প্যাশন খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। এর জন্য দরকার আত্ম-অন্বেষণ। নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়—কোন কাজ করলে আমি সময়ের হিসাব ভুলে যাই? কোন কাজে আমি বারবার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়তে চাই না? কোন বিষয় আমাকে গভীরভাবে ভাবায়, উত্তেজিত করে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তরেই লুকিয়ে থাকে মানুষের প্রকৃত আগ্রহ। অনেক সময় সমাজ, পরিবার কিংবা আর্থিক চাপ আমাদেরকে এমন পথে ঠেলে দেয়, যেখানে প্যাশনের কোনো স্থান থাকে না। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেই জীবন ভারী হয়ে ওঠে, কারণ মন আর তৃপ্তি খুঁজে পায় না।

নিজের প্যাশনকে খুঁজে বের করা মানে একপ্রকার সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া। কারণ এতে অনেক সময় ঝুঁকি নিতে হয়, পরিচিত গণ্ডি ভাঙতে হয়। হয়তো প্রথমে সমালোচনা আসে, অনেকে বলে—এতে ভবিষ্যৎ নেই। কিন্তু যিনি নিজের ভেতরের আগ্রহকে চেপে রাখেন না, বরং তাকে বাস্তবায়নের পথ খোঁজেন, তিনিই শেষ পর্যন্ত সত্যিকারের আনন্দ আর সাফল্যের স্বাদ পান।

প্যাশন হলো এমন এক সঙ্গী, যা কখনো মানুষকে একা হতে দেয় না। পড়াশোনা, কাজ কিংবা যেকোনো সম্পর্ক—সবখানেই যদি নিজের আগ্রহকে জায়গা দেওয়া যায়, তবে জীবন আরেকটু সহজ, আরেকটু সুন্দর হয়ে ওঠে। তাই নিজের ভেতরের কণ্ঠস্বরকে শুনতে শিখতে হবে, সাহস করে পথে নামতে হবে, আর খুঁজে নিতে হবে সেই কাজ, যেটি শুধু জীবিকা নয়, বরং জীবনের আনন্দ হয়ে ওঠে।

Previous articleসময়কে শত্রু নয়, বন্ধু বানানো
Next articleমনোযোগের মন্ত্র

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here