তখন মেসেজ মানেই ছিলো একটা আলাদা গুরুত্ব।

১১ টাকায় রিচার্জ করলে ১০০টা এসএমএস পাওয়া যেতো—আর সেই ১০০টা যেন সারা দিনের ভাবনা, অনুভব, ভালোবাসা জমিয়ে রাখার একটা ছোট্ট ঝাঁপি। প্রতিটা শব্দ লেখার আগে দু’বার ভাবতে হতো, কোনটা ছাঁটাই করবো, কোনটা রাখলে সে ঠিক বুঝবে আমি কী বলতে চাচ্ছি। কিপ্যাডে একটা ‘s’ লেখার জন্য চারবার চাপ দিতে হতো, তবু মন কখনো ক্লান্ত হতো না।

মেসেজ বড় হয়ে গেলে কেটে ছিঁড়ে ছোট করতে হতো, যেন তবু মূলটা থেকে যায়। তখন ‘ডেলিভারড’, ‘সিন’, ‘অনলাইন’ এই শব্দগুলো ছিলো না, ছিলো শুধু পাঠানোর পর নিঃশব্দে অপেক্ষা। বার্তাটি পৌঁছেছে কি না, পড়েছে কি না, জানার উপায় ছিলো না, তবু ভরসা ছিলো—সে পড়বেই।

রাতের শুভরাত্রি আর সকালের শুভ সকাল বলার জন্য আলাদা করে মেসেজ জমিয়ে রাখা হতো। তখন ইমোজি ছিলো না—ভালো লাগা, খারাপ লাগা, অভিমান, অপেক্ষা—সবই বোঝাতে হতো শব্দে, আর অনুভব করতে হতো মন দিয়ে।

সব কিছু এত সহজ ছিলো না, তবু সবকিছুই যেন বেশি সত্যি ছিলো। তখন শব্দের দাম ছিলো, অপেক্ষার মূল্য ছিলো, আর ভালোবাসা মানেই ছিলো সময় আর শ্রম দিয়ে গড়ে তোলা কিছু একটার নাম।

Previous articleঅন্যের আলো জ্বালানো মানুষ

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here