ঝড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা গাছের গল্প আসলে মানুষের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। আকাশ হঠাৎ কালো হয়ে এলো। দূরে বজ্রের গর্জন, বাতাসে অস্থিরতা। মুহূর্তেই ঝড় নেমে এলো—প্রকৃতির তাণ্ডব যেন সবকিছু ছিঁড়ে ফেলতে চাইছে। সেই গ্রামমাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল গাছ। শাখাগুলো উন্মত্ত বাতাসে দুলছে, পাতাগুলো ছিঁড়ে উড়ে যাচ্ছে, কাণ্ডে আঘাত করছে ধুলোর ঢেউ। তবুও গাছটি ভাঙছে না, উপড়ে পড়ছে না। গভীর শেকড় তাকে শক্ত করে বেঁধে রেখেছে মাটির সাথে।
ঝড় যত তীব্র হলো, গাছ ততই নিজের শেকড়ের উপর ভর করল। মনে হলো সে জানে—ঝড় চিরদিন থাকে না। অবশেষে আকাশ পরিষ্কার হলো, বাতাস শান্ত হল, আর গাছটি তখনো দাঁড়িয়ে—অটল, নির্ভীক, আগের মতোই প্রাণবন্ত।
মানুষের জীবনেও এমন ঝড় আসে—দুঃখ, কষ্ট, অভাব, হারানো কিংবা ব্যর্থতার আঘাত। তখন মনে হয় সব ভেঙে যাবে। কিন্তু যারা নিজের বিশ্বাসে দৃঢ় থাকে, ধৈর্য আঁকড়ে ধরে, নিজের শেকড়—অর্থাৎ মূল্যবোধ ও সাহস—অটুট রাখে, তারাই টিকে যায়। ঝড় কেটে গেলে তারা আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
ঝড় সাময়িক, কিন্তু দৃঢ়তা আর ধৈর্যই চিরস্থায়ী শক্তি। গাছ যেমন ঝড়ের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকে, তেমনি মানুষকেও শিখতে হবে—সংকটে মাথা নত নয়, বরং শেকড়ে ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা।