বলুন দেখি, কোথায় গেলে মানুষ সত্যিকারের শান্তি খুঁজে পায়? জীবনের প্রতিটি পথে ছড়িয়ে আছে অস্থিরতার ঢেউ, দুঃশ্চিন্তার কোলাহল, আকাঙ্ক্ষার দীর্ঘ ছায়া। শহরের ভিড়ে মানুষ ছুটে চলে প্রতিদিন, কেউ টাকার পেছনে, কেউ খ্যাতির মোহে, কেউ আবার বেঁচে থাকার নিরন্তর সংগ্রামে। কিন্তু এত দৌড়ঝাঁপের শেষে কি শান্তি মেলে?
শান্তি কি পাওয়া যায় উঁচু অট্টালিকার ভেতরে, নাকি সাজানো বাড়ির ঝলমলে কক্ষে? না কি তা লুকিয়ে থাকে অল্পতে সন্তুষ্ট কোনো দরিদ্রের হাসিতে? আমরা ভেবেছি সুখ মানে আরও কিছু অর্জন করা—আরও টাকা, আরও ক্ষমতা, আরও ভোগ। অথচ যতই জমা করি, তৃষ্ণা ততই বাড়তে থাকে।
বাস্তবতা হলো, শান্তি কোনো বাজারে বিক্রি হয় না, কোনো সম্পদের ভাণ্ডারেও তা মেলে না। শান্তি আসে অন্তরের ভেতর থেকে। হৃদয়ের সৎ নিস্তব্ধতায়, প্রার্থনার গভীরে, বা প্রকৃতির কোলের নির্জনতায় তা অনুভব করা যায়। নদীর ধারে বসে বয়ে যাওয়া জলের শব্দে, গাছের পাতায় বাতাসের দোলায়, কিংবা এক শিশুর সরল হাসিতে শান্তি আপনিই ধরা দেয়।
কিন্তু মানুষ ভুলে যায়—শান্তি কোনো বাহ্যিক জিনিস নয়, এটি একান্ত ভেতরের যাত্রা। যে মানুষ নিজের লোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, যে অন্যের প্রতি সদয় হয়, যে সামান্য নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে শেখে—তার জন্য পুরো পৃথিবীই শান্তির আবাস হয়ে ওঠে।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কোথায় যাব শান্তি পেতে? উত্তর সহজ, অথচ কঠিন—আমাদের যেতে হবে নিজের ভেতরে, নিজের হৃদয়ের গভীরে। সেখানেই রয়েছে সেই চিরকালের নির্জন আশ্রয়, যেখানে অস্থিরতা থেমে যায়, যেখানে মানুষ খুঁজে পায় সত্যিকারের প্রশান্তি।